নবীজী (সঃ) এর হাদিসের মাফহুমঃ "মানুষের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে সে যা কিছু শুনে সেটা যাচাই না করে বর্ণনা করে।"

আকীদাদাওয়াত ও তাবলিগবর্তমান ফিতনা

মুহতারাম মুস্তাকুন্নবী কাসেমী হাফিযাহুল্লাহ এর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি‼️

নিজামুদ্দিন অনুসারী এবং জুবায়েরপন্থীদের মধ্যে টঙ্গীর ময়দানে যে সংঘর্ষ হয়েছে এবং চারজন মারা গেছে নিঃসন্দেহে তা মারাত্মক অপরাধ ছিল। তাই বলে এক পক্ষকে ডালাওভাবে কাফের বলে দিতেছেন এটা কখনো কাম্য নয়, তাদেরকে তাকফির করা কোনভাবেই বৈধ নয়, এটা চুড়ান্ত পর্যায়ের বাড়াবাড়ি। আল্লাহ তাআলা আমাদের হেফাজত করেন।

নিজামুদ্দিন অনুসারী এবং জুবায়েরপন্থীদের মধ্যে টঙ্গীর ময়দানে যে সংঘর্ষ হয়েছে এবং চারজন মারা গেছে নিঃসন্দেহে তা মারাত্মক অপরাধ ছিল। তাই বলে এক পক্ষকে ডালাওভাবে কাফের বলে দিতেছেন এটা কখনো কাম্য নয়, তাদেরকে তাকফির করা কোনভাবেই বৈধ নয়, এটা চুড়ান্ত পর্যায়ের বাড়াবাড়ি। আল্লাহ তাআলা আমাদের হেফাজত করেন।
কারো কোন কাজে সন্দেহ হলে বা গুনাহের কাজ করলেই তাকে জিন্দিক, কাফের, মুরতাদ, নাস্তিক ইত্যাদি বলে প্রচার করা জায়েজ নয়। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী।

ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন,
يجب الاحتراز من تكفير المسلمين بالذنوب والخطايا فإنه أول بدعة ظهرت في الإسلام فكفر أهلها المسلمين واستحلوا دماءهم وأموالهم –مجموع الفتاوى، ج: 13، ص: 31، ط. مجمع الملك فهد

“গুনাহ ও নাফরমানির ভিত্তিতে মুসলিমদের তাকফির করা থেকে সাবধান থাকা জরুরি। কারণ, এটিই ইসলামের ইতিহাসে দেখা দেয়া সর্বপ্রথম বিদআত। ফলশ্রুতিতে তারা মুসলিমদের তাকফির করেছে এবং জান মাল বৈধ গণ্য করেছে।”–মাজমুউল ফাতাওয়া : ১৩/৩১

কোনো মুসলিমকে তাকফির করার অর্থ হলো, তার ব্যাপারে এ সিদ্ধান্ত দেওয়া যে, সে ইসলাম থেকে বের হয়ে গেছে। এখন দুনিয়া ও আখিরাতে তার ওপর কাফির ও মুরতাদের বিধান প্রয়োগ হবে। যেমন, তার বিয়ে ভেঙে যাবে, পূর্বের সকল নেক আমল নষ্ট হয়ে যাবে, তাওবা করে পুনরায় ইসলামে ফিরে না এলে হত্যা করে ফেলা হবে, সে শাসক হলে তাকে অবশ্যই অপসারণ করতে হবে, সংঘবদ্ধ দল হলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে। এ অবস্থায় মারা গেলে তাদের জানাযা পড়া যাবে না, মুসলমানদের কবরস্থানে দাফন করা যাবে না, পরকালে চিরস্থায়ী জাহান্নামি হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।

তাই কাউকে তাকফির করা সাধারণ কোনো বিষয় নয়। এর সাথে অনেক হুকুম-আহকাম ও মাসআলা-মাসায়েল জড়িত। দুনিয়াতে তার জান-মালের নিরাপত্তা, জানাযা, কাফন-দাফন ইত্যাদি এবং আখিরাতে তার চিরস্থায়ী সফলতা কিংবা ব্যর্থতা, জান্নাতি বা জাহান্নামি হওয়ার ফায়সালাসহ অনেক কিছু এর সাথে জড়িত।

এ কারণেই ওলামায়ে কেরাম তাকফিরের ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করেছেন। তাকফিরের শর্ত ও প্রতিবন্ধকগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবেচনার পর যখন কারো কুফরের বিষয়টি অকাট্য ভাবে প্রমাণিত হয়, কোনো ভাবেই যখন তাকে ইসলামের গণ্ডিতে রাখা যায় না, তখনই কেবল তাকফিরের হুকুম দেন।

কাউকে তাকফির করার বিষয়টি যেহেতু খুবই স্পর্শকাতর তাই শরিয়ত এ ব্যাপারে আমাদেরকে খুব সাবধানতা অবলম্বন করার নির্দেশ দিয়েছে। সুস্পষ্ট ও অকাট্য দলিল প্রমাণ ছাড়া কাউকেই তাকফির করা যাবে না।
তাকফিরের বিষয়টি এতই স্পর্শকাতর যে, যেন তেন কোন অজুহাতে কাউকে তাকফির করে বসলে, নিজের ঈমান হারানোর আশঙ্কা আছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ব্যাপারে আমাদেরকে সতর্ক করে গেছেন। তিনি ইরশাদ করেছেন,
إذا كفر الرجل أخاه فقد باء بها أحدهما – صحيح مسلم، رقم: 224؛ ط. دار الجيل بيروت + دار الأفاق الجديدة ـ بيروت.

“কোনো ব্যক্তি তার কোনো (মুসলিম) ভাইকে তাকফির করলে দু’জনের একজন তা অবশ্যই বহন করবে।”–সহীহ মুসলিম ২২৪।

মুফতি মুস্তাকুন্নবী কাসেমী হাফিযাহুল্লাহ এর কাছের বা পরিচিত কেউ থাকলে দয়া করে বিষয়টি মুহতারামের নজরে এনে শুধরে দিবেন বা যিনি শুধরে দিতে পারবেন তাকে বিষয়টি অবহিত করবেন। জাযাকুমুল্লাহ।।

ইসলামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এটা ভারসাম্যপূর্ণ ধর্ম। সবকিছুতে মধ্যমপন্থা অবলম্বন ইসলামের শিক্ষা। প্রান্তিকতা, বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি এসব ইসলাম সমর্থন করে না। ইফরাত ও তাফরিত উভয়ই দ্বীনের জন্য ক্ষতিকারক। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি থেকে হেফাজত করেন, সঠিক আকীদা লালন করা তার উপর অবিচল থাকা এবং তার সংরক্ষকদের কৃতজ্ঞতা আদায়ের তাওফীক দান করুন।

#TahqiqOnline #তাকফির #ইসলামেরশান্তি #মধ্যমপন্থা #দ্বীনেরশিক্ষা #ইফরাতওতাফরিত

Show More

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button