তাবলীগ জামাতের দ্বন্দ্ব: সংঘাত নয়, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও মেহনতের পথ
তাবলীগ জামাতের দ্বন্দ্ব এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দিকে আমাদের পথ: সমস্যা ও সমাধান।
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
এটি একটি দীর্ঘকালীন দ্বন্দ্ব এবং বিভ্রান্তি যা তাবলীগ জামাতের অনুসারীদের মধ্যে চলতে এসেছে। যোবায়ের সাহেবের অনুসারীরা বিগত সাত বছর ধরে ইজতেমার প্রথম অংশে অংশগ্রহণ করেছিল, এরপর তারা মাঠ ছেড়ে দেয়, এবং সাদ সাহেবের অনুসারীরা ইজতেমা করে। গত এক বছরে একটিও সংঘর্ষ হয়নি, কেউ আহত হয়নি।
ঠিক যেমন কাকরাইল মসজিদে, যোবায়ের সাহেবের অনুসারীরা জায়গা ছেড়ে দিয়েছে, সেখানে কোনো ধরনের সংঘর্ষ হয়নি। এবছরও, যোবায়েরপন্থীরা পূর্বে মাঠ ছাড়বে না বলেছিল, তাদের হুমকির পরিণতি হতে পারে রক্তাক্ত। অথচ, একই মাঠে সাদপন্থিরা ইজতেমা করবে, কিন্তু জোড় করতে দিবে না—এটি একেবারে অযৌক্তিক দাবি।
এমন অবস্থায়, কি দরকার ছিল এত হুমকি, উত্তাপ আর উত্তেজনা ছড়ানোর? ক্ষতিগ্রস্তরা, তাদের দায় কেউ নেবে না। এই ধরনের সৃষ্ট হুমকির পরিবেশে, রক্তের দাম উঠানোর কোনো অর্থ হয় না। যে মহাসংকটের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা থেকে বের হওয়ার একমাত্র পথ হলো শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান।
শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান:
তাবলীগ জামাতের এই দ্বন্দ্বে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও একতাবদ্ধ মেহনতের প্রয়োজনীয়তা এখন অতীব জরুরি। যতদিন না উভয়পক্ষের মুরব্বীরা একত্র হয়ে একটি সঠিক সমাধানে পৌঁছাতে পারেন, ততদিন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে একে অপরকে সম্মান জানানো এবং পরস্পরের সহযোগিতা করা উচিত।
আজকের সময়ের প্রকৃত মুরব্বি, যারা তাবলীগ জামাতের সঠিক পথকে অবলম্বন করছেন, তারা এক টেবিলে বসে এই সংকটের সমাধান করতে পারেন। সাদপন্থি মুরব্বিরা যেমন:
- সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম
- মাওলানা মোসারেফ সাহেব
- প্রফেসর ইউনুস সাহেব
এবং যোবায়েরপন্থি মুরব্বিরা:
- ক্বারী জোবায়ের সাহেব
- মাওলানা রবিউল হক সাহেব
- মাওলানা ওমর ফারুক সাহেব
এদের মধ্যে যদি আলোচনার মাধ্যমে একতা তৈরি হয়, তাহলে সমাধান আসবে ইনশাআল্লাহ। কারণ, এগুলোই প্রকৃত মুরব্বি। অন্যরা, যারা রাজনৈতিক বা হটকারী আচরণ করছেন, তারা কখনোই সমস্যার সমাধান করবেন না। তাদের কাজ হলো পরিবেশকে উত্তেজিত করা এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা।
একটি জীবনই শেষ হয়ে গেলে, তা আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।
তাবলীগ জামাতের অনুসারীদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও, আমরা একে অপরকে সম্মান ও সহযোগিতা করতে পারি। মতপার্থক্যের কারণে হামলা, হানাহানি বৈধ হতে পারে না, এবং আমাদের সকলের দায়িত্ব হলো শান্তিপূর্ণ মেহনত চালিয়ে যাওয়া।
বিশ্বের অন্যান্য দেশে, যেমন ভারত, যেখানে দেওবন্দ মাদ্রাসার আলেমরা সাদ সাহেবের ইজতেমার প্রতি কখনোই বাধা দেয়নি, সেখানে সংঘর্ষ হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশে কেন এই পরিস্থিতি? আমাদের দেশের আলেমদের আরও দায়িত্বশীল ও পরিপক্ব আচরণ প্রয়োজন। সংঘাতের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দিকে আমাদের সবাইকে এগিয়ে যেতে হবে।
⏩ করণীয়:
1️⃣ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য উভয়পক্ষের মুরব্বিদের একত্র হতে হবে।
2️⃣ হামলা, হানাহানি বা উত্তেজনা থেকে বিরত থাকতে হবে।
3️⃣ ইসলামিক মেহনত অব্যাহত রাখতে হবে এবং এটি সকলের জন্য কল্যাণকর হবে।
আমরা সকলেই মুসলিম, এবং আমাদের উদ্দেশ্য এক। শুধু আল্লাহর রাস্তায় কাজ করার মাধ্যমে এই দ্বন্দ্ব ও বিভ্রান্তি দূর করা সম্ভব হবে।
💬 আপনার মতামত এবং পরামর্শ আমাদের সাথে শেয়ার করুন এবং এই পোস্টটি আরও সবার কাছে পৌঁছে দিন।
📧 যোগাযোগ:
🌐 তাহকিক অনলাইন
📱 সামাজিক মাধ্যম:
وَصَلَّى اللَّهُ عَلَىٰ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ وَآلِهِ وَصَحْبِهِ أَجْمَعِينَ