নবীজী (সঃ) এর হাদিসের মাফহুমঃ "মানুষের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে সে যা কিছু শুনে সেটা যাচাই না করে বর্ণনা করে।"

প্রকাশিত মিথ্যা

মিথ্যা ও বেয়াদবি: জুবায়েরপন্থী হেফাজত অনুসারীদের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য

সম্প্রতি এক জুবায়েরপন্থী হেফাজত অনুসারীর বক্তব্যে শোনা গেছে একটি চরম বেয়াদবি মূলক মন্তব্য: “দাওয়াত না মানলে পাছার মধ্যে বাড়ি দিতো নবী!”
এই ধরণের মন্তব্য শুধু মিথ্যা নয়, বরং সরাসরি নবীজির (সা.) ব্যক্তিত্ব ও সম্মানের প্রতি চরম অবমাননা। এটি কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর ও গর্হিত।


রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর দাওয়াতি পদ্ধতির শিক্ষা

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো দাওয়াত প্রত্যাখ্যানকারীদের প্রতি শারীরিক আঘাত কিংবা বেয়াদবি করেননি। বরং, তিনি সর্বদা দাওয়াতের মাধ্যমে সত্যকে পেশ করেছেন এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে রিসালাতের বিশেষ বিধান বাস্তবায়ন করেছেন।

কুরআনের আলোকে নবীদের দাওয়াতের মূলনীতি:

  1. সত্যের স্পষ্ট প্রমাণ প্রদান: নবীগণ এমনভাবে সত্য প্রকাশ করতেন, যা দেখে ও শুনে কোনো অজুহাতের সুযোগ থাকত না।
  2. সুযোগ ও সময়: নবীগণ তাদের জাতিকে যথেষ্ট সময় দিতেন যাতে তারা সরাসরি নবীদের মুখ থেকে আল্লাহর বার্তা শুনতে ও বুঝতে পারে।
  3. ইনসাফপূর্ণ ফয়সালা: যারা নবীদের উপর ঈমান আনত, তাদের মুক্তি দেওয়া হতো এবং যারা অস্বীকার করত, তাদের আল্লাহর শাস্তি নাজিল করা হতো।

আল্লাহ তাআলা বলেন:
“যাতে এই রাসূলদের সতর্ক করার পর মানুষের জন্য আল্লাহর সামনে কোনো ওজর পেশ করার সুযোগ না থাকে।”
(সুরা নিসা : ১৬৫)


কওমি দেওবন্দিদের বাস্তব অবস্থান

এ ধরনের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য শুধু হেফাজত অনুসারীদের প্রকৃত চরিত্রই প্রকাশ করে না, বরং কওমি দেওবন্দিদের প্রকৃত অবস্থাও তুলে ধরে।

  • আরব, আফ্রিকা, ইউরোপ, এশিয়া এবং বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ আহলে হাদিস ও সালাফি আলেমদের দৃষ্টিভঙ্গি:
    লক্ষ লক্ষ আহলে হাদিস ও সালাফি আলেমদের মতে, কওমি দেওবন্দীরা বিদআতে লিপ্ত, বাতেল, এবং পথভ্রষ্ট।
  1. কওমি দেওবন্দীদের ঈমান, আকিদা, এবং আমল শুদ্ধ নয়।
  2. তওবা না করলে কওমি দেওবন্দীদের আমল ও ঈমান গ্রহণযোগ্য নয়।
  3. কওমি দেওবন্দীরা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের অন্তর্ভুক্ত নয় এবং ইসলামের মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন।
  4. এদের বিদআত ও বিভ্রান্তি আহলে সুন্নাহর চিরন্তন শিক্ষার বিপরীত।

পাকিস্তান ও হিন্দুস্তানের বেরেলভীদের অবস্থান

পাকিস্তান, ভারত এবং বাংলাদেশের প্রায় ২০ কোটি সুন্নি বেরেলভীর দৃষ্টিতে, কওমি দেওবন্দিরা গুস্তাখে রাসূল, বাতিল ফিরকা এবং শয়তানের জামাত। এই বক্তব্যের মাধ্যমে তাদের দাবির বাস্তবতাও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।


উপসংহার

ইসলামের পবিত্রতা এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্মান রক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব। যারা মিথ্যা এবং বেয়াদবির আশ্রয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে, তাদের এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি।

আমাদের কর্তব্য সত্য প্রচার করা এবং উম্মাহর বিভ্রান্তি দূর করা। নবীজির (সা.) মহান চরিত্র ও শিক্ষা থেকে বিচ্যুত গোষ্ঠীর আসল চেহারা উন্মোচন করা একান্ত প্রয়োজন।


    Wassalam!

    Show More

    মন্তব্য করুন

    আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

    Back to top button