নবীজী (সঃ) এর হাদিসের মাফহুমঃ "মানুষের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে সে যা কিছু শুনে সেটা যাচাই না করে বর্ণনা করে।"

তাহকিক ওজাহাতি জোরতথ্য যাচাইপ্রকাশিত মিথ্যামাওলানা সা'দ

মিথ্যা অপবাদ – ০৩ | মাওলানা সাদ সাহেবের “রুজু” নিয়ে মিথ্যা অপবাদ | Tahqiq Online

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

মাওলানা সাদ সাহেবের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার করা হয়েছে যে, তিনি মুসা আলাইহিস সালামের ব্যাপারে যে রুজু করেছেন সেটা গোলমাল রুজু। তিনটি কারণে এই রুজুটিকে গোলমাল বলা হয়েছে:

১। মাওলানা সাদ সাহেব ভুলটা কী বলেছেন সেটা নাকি বলেন নাই।

২। ভুলটাকে নাকি ভুল বলে ঘোষণা দেন নাই।

৩। সেই ভুলটার সহিহ কথা কী- সেটা নাকি বলেন নাই।

প্রথমে আমরা প্রচারটি শুনে নেইঃ

“এরপরে আবার কিছুদিন পর যখন এখানে ইজতেমা ঘনালো তখন উনি হায়াতুস সাহাবার মজলিশে, আবার দেশে আসার পর কাকরাইলে- দুইবার রুজু করেছেন মুসা আলাইহিস সালামের ঘটনা নিয়ে।  কেউ যদি এরকম বলে থাকে তার রুজু করা উচিৎ, আমি যদি এরকম বলে থাকি আমার রুজু করা উচিত- এই ধরনের ভাষায়। কিন্তু ভুলটা কী বলেছেন এবং ঐটা যে ভুল এটা ঘোষণা দেওয়া আর সহিহ কথা কী- এগুলা কিছু না।

মুসা আলাইহিস সালাম এর ব্যাপারে আলোচনা করতে গিয়ে এরকম ভুল হয়ে যায়, কারো যদি এরকম ভুল হয়ে থাকে তার রুজু করা উচিত, আমারও রুজু করা উচিত- এভাবে বলেছে নিজামুদ্দিনেও কাকরাইলেও। তাও যাক বলেছেন, বলেছেন।”

এই প্রচার থেকে আমরা জানলাম যে, মাওলানা সাদ সাহেব ভুলটা কী বলেছেন সেটা বলেন নাই, ভুলটাকে ভুল বলে ঘোষণা দেন নাই এবং সেই ভুলের সহিহ কথা কী সেটাও বলেন নাই।

এখন আমরা মাওলানা সাদ সাহেবের রুজুটি শুনে নেইঃ

“যেখানেই যে কোন ভাবেই ছোট কথার মধ্যেও, আম্বিয়া আলাইহিস সালামদের পবিত্রতা, তাদের আজমত ও তাদের মর্যাদার অসামঞ্জস্য হয়ে যায়। যেভাবে আমি আরজ করছি যে, আমার দ্বারা বিভিন্ন সময় বয়ানে মুসা আলাইহিস সালামের ঘটনায় বিশেষ করে উনার ব্যক্তিগত ইবাদতে মশগুল হয়ে যাওয়া- এই সম্পর্কে বয়ান হয়েছে।

সে যে কথাই হোক, যার দ্বারা আম্বিয়া আলাইহিস সালামদের উঁচু মর্যাদা আর তাদের পবিত্রতা আর আম্বিয়া আলাইহিস সালামদের কাজের উপর সরিষার দানা পরিমাণ কোন দোষ বা ভুলের সম্ভাবনাও হয়, তার থেকে সর্বদা রুজু করা উচিত।

এই ঘটনায় যেহেতু নিশ্চিতভাবে এদিকে ধ্যান যায় যে, নাউজুবিল্লাহ, মুসা আলাইহিস সালামের স্বগোত্র থেকে আলাদা হওয়ার কারণে গুমরাহী এসেছিল, এই কথার না বয়ান করা উচিত আর না এই ভুলের সমর্থনের জন্য কোন চেষ্টা করা উচিত। বরং এমন বিষয় থেকে সাবধানতা ও দূরে থাকা উচিত।

এতে কোন সন্দেহ নাই যে, আম্বিয়া আলাইহিস সালামদের দুইটি জিম্মাদারী থাকত- দাওয়াত ও ইবাদত। আর তারা দুইটাতেই পুরো চেষ্টা করতেন। এই কথার সম্ভাবনা আনা উচিত না যে, তাদের কোন এক আমলের চেষ্টায়, আল্লাহ না করে, আরেক আমলের মধ্যে ক্ষতি হয়েছে- এমন সম্ভব নয়।

এজন্য বয়ানের মধ্যে কোথাও এই কথা এসে পড়েছে, তার থেকে আমিও রুজু করছি আর সাথীদেরকেও এই ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।”

এখন আমরা লক্ষ্য করি, প্রথম পয়েন্ট যে- মাওলানা সাদ কী ভুল বলেছেন সেটা তার রুজুর মধ্যে বলেছেন কিনা। আমার শুনলাম যে, মাওলানা সাদ উনার রুজুর মধ্যে বলেছেন যে,

“আমার দ্বারা বিভিন্ন সময় বয়ানে মুসা আলাইহিস সালামের ঘটনায়, বিশেষ করে উনার ব্যক্তিগত ইবাদতে মশগুল হয়ে যাওয়া এই সম্পর্কে বয়ান হয়েছে।”

এখান থেকে আমরা বুঝলাম যে, মাওলানা সাদ সাহেব কী ভুল বলেছেন তা স্পষ্ট করে বলেছেন। অথচ প্রচার করা হলো যে, ভুলটা কী বলেছেন সেটা মাওলানা সাদ সাহেব বলেন নাই। এতে প্রমাণিত হয় যে, এ প্রচারটি মাওলানা সাদের উপর মিথ্যা অপবাদ।

এখন আমরা লক্ষ্য করি, দ্বিতীয় পয়েন্ট যে- তিনি ভুলটাকে ভুল বলে ঘোষণা দিয়েছেন কিনা। আমরা শুনলাম যে, মাওলানা সাদ সাহেব তার রুজুর মধ্যে বলেছেন যে,

“এই ঘটনায় নিশ্চিতভাবে ঐদিকে ধ্যান যায় যে, নাউজুবিল্লাহ, মুসা আলাইহিস সালামের স্বগোত্র থেকে আলাদা হওয়ার কারণে গুমরাহী এসেছিল। এই কথার না বয়ান করা উচিত আর না এই ভুলের সমর্থনের জন্য কোন চেষ্টা করা উচিত।”

এখান থেকে আমরা বুঝলাম যে, মাওলানা সাদ সাহেব ভুলটিকে স্পষ্ট করে ভুল বলে ঘোষণা দিয়েছেন। অথচ প্রচার করা হলো যে, মাওলানা সাদ ভুলকে ভুল বলে ঘোষণা দেন নাই। এতে প্রমাণিত হয় যে, এই প্রচারণা মাওলানা সাদ সাহেবের উপর আরেকটি মিথ্যা অপবাদ।

এখন আমরা লক্ষ্য করি, তৃতীয় পয়েন্ট যে- তিনি সেই ভুল কথাটির সহিহ কী সেটা বলেছেন কিনা। আমরা শুনলাম যে, মাওলানা সাদ সাহেব তার রুজুর মধ্যে বলেছেন যে,

“এই কথার সম্ভাবনাও আনা উচিত না যে, তাদের কোন এক আমলের চেষ্টায়, আল্লাহ না করেন, আরেক আমলের মধ্যে ক্ষতি হয়েছে- এমন সম্ভব নয়।”

এখান থেকে আমরা বুঝলাম যে, মাওলানা সাদ সাহেব ভুল কথাটির সহিহ কী সেটা স্পষ্ট করে বলেছেন। অথচ প্রচার করা হলো যে, তিনি ভুল কথাটির সহিহ কি সেটা তার রুজুর মধ্যে স্পষ্ট করে বলেন নাই। শুধু তাই নয়, প্রচার করা হয়েছে যে, মাওলানা সাদ সাহেবের রুজুটি হচ্ছে গোলমাল রুজু। এখান থেকে প্রমাণিত হয় যে, এই প্রচারটি মাওলানা সাদ সাহেবের উপর মিথ্যা অপবাদ।

যারা উপরের সম্পূর্ণ বিষয়টি ভিডিও আকারে দেখতে চান তারা নিচের ভিডিওটি ক্লিক করুন

নতুন নতুন তাহকিক পেতে ক্লিক করুন আমাদের ইউটিউব এবং ফেসবুক পেইজেঃ

আপনার মতামত জানাতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:
👉 তাহকিক অনলাইন
👉 টেলিগ্রাম চ্যানেল
👉 ফেসবুক পেইজ
👉 ইউটিউব চ্যানেল

Show More

Related Articles

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button